শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১২ই সেপ্টেম্বর থেকে খুলবে
প্রায় ১৭ মাস বছর বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশের সব স্কুল কলেজ আগামী ১২ই সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেয়া হচ্ছে।
১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার চিন্তা রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শুক্রবার চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে: প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কথা জানান মন্ত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে অক্টোবরে এমন ঘোষণা কয়েকদিন আগেই হয়েছে।
এ ছাড়া আগের ঘোষণা অনুযায়ী এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “১২ সেপ্টম্বর থেকেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারব। স্কুল-কলেজগুলো খোলার জন্য আমরা আগেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।”
দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে গত বছরের ১৭ মার্চ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফা চেষ্টা করেও পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি না হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যায়নি, বরং দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে।
গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় শিক্ষার্থদের এসএসসি ও জেএসসির ফলাফলের গড় করে মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়। তার ভিত্তিতেই তাদের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হচ্ছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও আগের রোলে পরের ক্লাসে তুলে দেওয়া হয়।
দেড় বছর ধরে ঘরে বসে থাকা শিক্ষর্থীদের জন্য অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা হলেও তাতে শিক্ষা কতটা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে সংশ্লিষ্টদের। এমন পরিস্থিতিতে এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরাও দুশ্চিন্তায় ছিল।
শিক্ষামন্ত্রী সংবাদিকদের বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ১২ সেপ্টেম্বরকে আমরা নির্ধারণ করেছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও অ্যাসাইনমেন্ট প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।”
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ‘বেশিরভাগ’ শিক্ষক করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন। ভবিষ্যতে ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা সরকার করছে।
কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ পরে বলেন, “আমরা মনে করছি যে দীর্ঘ ১৭ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল, এটা আমাদের করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় ভালো কাজ করেছে। এখন আমার মনে হয় সবদিক বিবেচনা করে স্কুল, কলেজ, বিশবিদ্যালয় পর্যায়ক্রমে খুলে দেওয়া যেতে পারে।
“এক্ষেত্রে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সারাবিশ্বে যে জনস্বাস্থ্যবিধি চালু আছে সেগুলোকে বাংলাদেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে সেগুলো কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।”

ডা. দীপুমণি জানান, গত সপ্তাহে নেয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলমান ছুটি ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। দীর্ঘ ১৭ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কারণে শিশু-কিশোররা স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার সুযোগ বঞ্চিত হচ্ছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে। আগামী দিনে আরো কমবে। ফলে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে ছুটি রয়েছে তা আর বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে আমরা চাইলে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দিতে পারবো। যদি এর মধ্যে আর বড় কোনো সমস্যা না হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলে সঠিক মনিটরিংও নিশ্চিত করার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বিশেষজ্ঞদের কথা হয়েছে, তারা মনে করছেন আমরা যে সংক্রমণের হার অনেক কম রাখতে পেরেছি, তার অন্যতম কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা। অন্য অনেক কারণের পাশাপাশি এটিও অনেক ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন তারা।